সংবাদ শিরোনাম
কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান সরাইলে উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী তপু লস্কর নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে একজন নিহত ও আহত-৩।। আটক-৪ কমলগঞ্জে নিরাপদ সড়ক চাই’র আইডি কার্ড বিতরণ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের ৫ম দিনে নির্বাচিত গ্রন্থের প্রকাশনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন

আজ ৩৭ তম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আন্দোলন ও শহীদ পলু দিবস

আজ ৩৭ তম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আন্দোলন ও শহীদ পলু দিবস

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি

আজ ৩৭ তম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আন্দোলন ও শহীদ ওবায়দুর রউফ পলু দিবস। যার রক্তে আমরা পেয়েছিলাম একটা জেলা।
একজন বাউনবাইরার সন্তান হিসেবে আসুন জেনে নিই- জেলা আন্দোলনের ইতিহাস এবং বুকে লালন করি শহীদ পলুর স্মৃতি।
২৭ নভেম্বর বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাবাসীর স্মরণীয় ঐতিহাসিক ৩৭ তম জেলা আন্দোলন ও শহীদ ওবায়দুর রউফ পলু দিবস। আজ হতে ৩৭ বছর আগে বিগত ১৯৮৩ সালে সকল ধরণের প্রয়োজনীয় সরকারী প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বঞ্চিত তৎকালীন মহকুমা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে জেলা ঘোষণা করার জন্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের নিকট দাবী জানিয়ে সর্বদলীয় এবং সর্বস্তরের জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠে। সর্বদলীয় জেলা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ পালন করতে থাকে একের পর এক কর্মসূচী। আন্দোলন তীব্র গণআন্দোলনে রূপ নেয়ার পরও সেনা শাসকের সরকার দাবী না মেনে নিরবতা পালন করায় জেল জুলুমকে উপেক্ষা করে চূড়ান্ত পর্বে ২৭ নভেম্বর ডাকা হয় অনির্দিষ্টকালের হরতাল কর্মসূচী। আন্দোলনের তীব্রতায় অচল হয়ে যায় মহকুমা প্রশাসনের সকল কার্যক্রম। চূড়ান্ত পর্বে জেলা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের আহুত ২৭ নভেম্বর দিনে হরতাল শুরু হওয়ার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বস্তরের ছাত্র জনতার অবরোধে ভোর হতে রেলওয়ে আর সড়ক পথে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় পূর্বাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমানার বাইরে সকল স্থানে লঞ্চ ট্রেন বাস ট্রাক আটকা পড়ে যায় যাত্রী ও মালামালসহ। শহরের সকল অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে সর্বস্তরের নারী পুরুষ শিশু মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত করে তুলে রেল ও সড়ক পথ। অবরুদ্ধ পথে প্রতিবন্ধকতা (বেড়িকেড) তৈরী করে টায়ার গাছ ফেলে জ্বালানো হয় আগুন। সে আগুন ক্রমশঃ ছড়িয়ে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ভবন, সিও অফিস, জনতা ব্যাংক প্রধান শাখা কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে। বিক্ষোভের আগুনে পুড়ে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয় সবকিছু। পুরো রেলওয়ে স্টেশনে নিয়োজিত তৎকালীন বিডিআর এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় অবরোধকারী ছাত্র জনতা। সকাল থেকে চলতে থাকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন রেলব্রীজের উপরে দাঁড়ানো ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজের বিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওবায়দুর রউফ পলুসহ কয়েকজন। তারা মহকুমা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে জেলা করার লক্ষ্যে আত্মদান করে শাহাদাৎ বরণ করেন। জনতা পলুর লাশ ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হলেও অন্যদের লাশ বিডিআর ছিনিয়ে নিয়ে গোপনে মাটি চাপা দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন। তবে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সেটা অস্বীকার করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা সেনাবাহিনীর তাক করা সশস্ত্র সাঁজোয়া যানের উপস্থিতিতে থমথমে শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ নভেম্বর দুপুরে কালো পতাকায় ঢাকা ওবায়দুর রউফ পলুর শোকবাহী মৌন মিছিল নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলিত হয় বিশাল জানাজায়। 
একই দিন বিকেলে শহরতলীর শেরপুরস্থ হযরত মীর শাহাবুদ্দীনের (রাহ.) মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে লাখো মুসল্লীর অশ্রুসজল নয়নে দাফন সম্পন্ন হয় ওবায়দুর রউফ পলুর।  সুফল হিসেবে ১৯৮৩ সালের শেষ নাগাদ নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিশাল জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে মহকুমার বিলুপ্তি ঘটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসীর দাবী ও পলুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে জেলার স্বীকৃতি ঘোষণা করেন। এর ধারাবাহিকতায় পরে স্থাপিত হয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়সহ জেলা পর্যায়ের পাসপোর্ট অফিস এবং বিভিন্ন দপ্তর। যার সুফল কাছে থেকে বর্তমানে ভোগ করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী।
এদিকে, জেলা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নেতৃবৃন্দের কয়েকজন বর্তমানে আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। কেহ অসুস্থ। অন্যরা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে ব্যস্ত। এরই মধ্যে জেলা আন্দোলনের স্মৃতিকে টিকিয়ে রাখতে বিগত ১৯৯১ সালের ০১ নভেম্বর গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে পলুর স্মৃতিকে চীর জাগরুক রাখতে কোর্ট রোড এর নাম পরিবর্তন করে শহীদ পলু সড়ক নামকরণ করেছে। পাশাপাশি জেলাবাসীর স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের নিকট বিভিন্ন দাবী জানিয়ে এসেছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com