স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেটা যদি আবার প্রকাশ্যে হয় তাহলে ধূমপায়ী ব্যক্তিসহ আশপাশের লোকজনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর সেই ধূমপায়ী যদি হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ধূমপানের স্থানটি যদি হয় কোন সরকারি কর্মকর্তার নিজ কার্যালয়ের চেয়ারে তাহলে তো সমালোচনার ঝড় উঠবেই।
এ ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক এর থানার ভেতরে তার নিজ কক্ষে। আর তাৎক্ষণিক কোন রসিক ব্যক্তি হয়তো সুকৌশলে ওসি সাহেবের ধূমপানের দৃশ্যটি স্মরণীয় করে রাখতে ক্যামেরা বন্দি করেন।
এদিকে গতকাল বুধবার (২৯ জুলাই) বিকেলে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার নিজ (ওসির) চেয়ারে বসে এভাবে ধূমপানের দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর থেকে ওসি নাজমুলের এমন বিতর্ককান্ডে মানুষের মনে বিভিন্নরকম প্রশ্নও তৈরী করছে। অনেকেই বলছেন, যেখানে সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন যার ফলশ্রুতিতে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অভিযানে মাদক নির্মূল অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে, আর এমন সময়টিতেই একজন থানা পুলিশের কর্তাব্যক্তি কিভাবে নিজের চেয়ারে বসে ধূমপান করেন তা নিয়েই সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠছে মাদক কতটা নির্মূল হবে সরাইলে !
ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় নিজ কক্ষে দায়িত্ব পালনকালে ধূমপানের এমন দৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেকেই বিভিন্ন সমালোচনা করে মন্তব্য করেন। দায়িত্ব পালনকালে এভাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ধূমপান করতে পারে কিনা তা নিয়ে স্থানীয় সাধারন নাগরিকদের মুখে মুখে সমালোচনার ঝড় বইছে। এমনকি খুদ জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও বিব্রত হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, যখনই কোন কাজে থানায় যায় তখনি ওসি সাহেবকে চেয়ারে বসে ধূমপান করতে দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন অতিমাত্রায় টেনশন করার কারণেই নাকি এতো বেশি ধূমপান করেন ওসি নাজমুল হক। অনেক সময় ওসির ধূমপানের কারনে তার কক্ষ ও আশপাশের এলাকায় ধূমপানের দুর্গন্ধে স্বাভাবিক চলাফেরা করা যায় না।
সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক উদ্দিন ঠাকুর জানান, এরকম একটি দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে প্রকাশ্যে ধূমপান করাটা ওসি সাহেবের উচিৎ হয়নি। ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনার পূর্ণাবৃত্তি যা না হয় সেজন্য উনি সচেতন থাকতে হবে। যাতে সাধারন মানুষের মাঝে কোনরকম বিরূপ ধারনা সৃষ্টি না হয়।
এ ব্যাপারে ওসি নাজমুল হক জানান, এটি (ধূমপান) আমি নতুন করলাম কিনা জানিনা ও এনিয়ে কেন বিব্রত করা হচ্ছে তাও বুঝতে পারছিনা। আর কেউই বা এ ছবিটি তুললো তাও বুঝতে পারছিনা। আমি আমার অফিসে কাজ করছিলাম। মাথায় অনেক টেনশন ছিলো সে জন্য এটি (ধূমপান) করেছি।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখে সরাইল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরই তিনি মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেন। সম্প্রতি সরাইল উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায়, মাসিক মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে ওসি নাজমুল হককে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়ে সংশোধন হওয়ার পরামর্শ দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব রফিক উদ্দিন ঠাকুর। ঐ মাসিক সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply