ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরধরে মনমোহিনী দাস (৯৫) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ দাহ করতে রাস্তা দিয়ে যেতে না দেওয়ায় পুকুরের পানি ভেঙ্গে লাশ নিতে হলো শ্মশানে।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর পশ্চিমপাড়া এলাকায়।

এ মর্মান্তিক ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তে এটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। এঘটনায় তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর পশ্চিম ইউনিয়নের তালশহর পশ্চিম পাড়ার মৃত কার্তিক চন্দ্র দাসের ছেলে হরিধন দাসের সাথে প্রতিবেশী পরিমল দাস ও হারাধন দাসের বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ চলছে। হরিধন দাসের বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য নিজস্ব কোন রাস্তা না থাকায় পরিমল দাস ও হারাধন দাসের বাড়ির ভেতর দিয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হরিধন দাসের মা মনমোহিনী দাস মারা যান। নিহত মনমোহিনী দাসের মরদেহ শ্মশানে নিয়ে দাহ করতে পরিমল দাস হারাধন দাসের বাড়ির উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চান হরিধন দাসের ছেলে বিজয় দাস। কিন্তু তাদের বাড়ির উপর দিয়ে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় পরে বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশের একটি পুকুরের পানি ভেঙ্গে মনমোহিনী দাসের মরদেহ দাহ করতে শ্মশানে নিয়ে যান তার পরিবার।

এ ব্যাপারে বিজয় দাস জানান, আমাদের পাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মারা গেলে তাদের বাড়ির উপর দিয়েই মরদেহ শ্মশানে নিতে হয়। কিন্তু তাদের সাথে পূর্বে থেকে আমাদের বিরোধ থাকায় তার মরদেহ নিতে অনুমতি দেয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পরিমল দাস জানান, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী কার্তিক মাসে শুধু সবজি খেতে হয়। এসময় আমাদের বাড়ির উপর দিয়ে কোন মরদেহ নিয়ে গেলে আমাদের ঘরের হাঁড়িপাতিল সবকিছু ফেলে দিতে হবে। তাহলে আবার নতুন করে কিনতে হবে। এ জন্য আমরা বাঁধা দিয়েছি।

এ ব্যাপারে তালশহর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সামা এ প্রতিবেদককে জানান, আমাকে বিষয়টা জানানো হয়েছে। রাতে উভয় পক্ষের লোকজনকে নিয়ে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।