সংবাদ শিরোনাম
বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানি করে এদেশে কেউ ঠিকে থাকতে পারে নাই; শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি

বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানি করে এদেশে কেউ ঠিকে থাকতে পারে নাই; শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি বলেছেন,বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানি করে এদেশে কেউ ঠিকে থাকতে পারে নাই। আর বেঈমানি আপন ও কাজের মানুষরাই হয়। তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে খন্দকার মোশতাক সহ কাছের মানুষরাই বেঈমানি করেছিলেন। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) ডিসেম্বরের ১০ তারিখকে ডেড লাইন দিয়েছেন। ১০ ডিসেম্বর তারা নাকি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাঁরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসবে সেই দুঃস্বপ্ন আগামী ৫০ বছরেও বাস্তবায়ন হবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার ভাই বোন ও পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করেছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বাসায় রাখার জন্য। পরে বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতা দেখিয়ে কোনো রকম রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি দিয়ে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,যারা শেখ হাসিনার দয়ায় জেল থেকে বাড়িতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরাই শেখ হাসিনাকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখেন। শেখ সেলিম আরো বলেন, অর্থপাচারকারী তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখেন। তিনি মে অপকর্ম করেছেন দেশে আসলে গণপিটুনিতে সে মারা যাবে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান ও ২০০৪ সনের ২১ শেখ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তারেক রহমান। সুতরাং রক্তের মধ্যেই যাদের রয়েছে খুন গুম ও নির্যাতনের মহোৎসব। তারা পেছন দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। যাদের জন্ম‌ই ক্যান্টরমেন্টে তারাই মুখে গণতন্ত্রের বলি উড়ায়। তিনি বলেন, এবার খেলা হবে দুর্নীতি, দূরবৃত্তায়ন ও দেশের অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে। তবে এই খেলায় যদি তাঁরা বেশি বেশি ফাউল করেন তাহলে তাদেরকে লাল কার্ড দেখানো হবে। খেলা হবে রাজপথে। ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, যারা গণতন্ত্র চান তাদের পূর্বসূরী (মেজর জিয়াউর রহমান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনাকারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নিরাপদে দেশ থেকে বিদেশে পাঠিয়ে পূনরবাস করেছিলেন ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংসদে আইন পাশ করেছিলেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তার বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাঞ্ছারামপুর আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত এ বি তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ নাসিরনগর আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, নারী সাংসদ অ্যারোমা দত্ত ,উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মঈন উদ্দিন মঈন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ মনির হোসেনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পেশ করে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আনিসুর রহমান।

সম্মেলনের প্রধান অতিথি শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার বক্তব্য শেষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা আওয়ামীলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এর নাম ঘোষণা করেন। পাশাপাশি সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ হিসেবে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ হিসেবে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন এর নাম ঘোষণা করেন। এসময় শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ভোগে নয়,ত্যাগেই প্রকৃত সুখ ও ভবিষ্যতে ভালো পদে যাওয়ার পথ সুগম করে। যেভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশ ও দেশের মানুষের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।
এদিকে, অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতি পদে কোনো প্রার্থী না থাকলেও সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থীতা ঘোষনা করেছিলেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খাঁন খোকন ও জেলা শ্রমিকলীগের একাংশের সভাপতি কাউছার আহমেদ।
উল্লেখ্য,২০১৪ ইং সনের ২৯ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি কে সভাপতি ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সম্মেলনের দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পর আজ ১২ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com