সংবাদ শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামাত-শিবিরের মাস্টার প্ল্যান থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামাত-শিবিরের মাস্টার প্ল্যান থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা

বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলায় জামায়েত শিবিরের মাস্টার প্ল্যান থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল। এ বিষয়ে গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এলাকাবাসী।
দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলা রেললাইনের পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর লাগোয়া কৃষি জমিতে জামায়াত পল্লী নামে একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সংগঠন জামায়ত শিবির। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও তার লালিত পালিত কয়েকজন সন্ত্রাসী চক্র। জামাত-শিবিরের মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় এ আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এলাকার প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো কবরস্থানের জায়গা দখল করে জামায়েত শিবিরের পরিকল্পিত জামায়েত পল্লীতে যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মাণেরও পাঁয়তারা করছেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন এ চক্রটি। এনিয়ে জামায়াত শিবিরের পৃষ্টপোষক চক্রের সাথে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে যে কোন সময় রক্তপাত ও হতাহতের মতো দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে,এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২০ ইং সনের ২২ শে জুলাই সরজমিন পরিদর্শন করে অনলাইন গণমাধ্যম সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকম ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে চক্রটি কিছুটা পিছু হটে। তবে সম্প্রতি ফের জামায়াত শিবির ও তাদের পৃষ্টপোষক স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রটি সক্রিয় হয়ে জামাত পল্লীর রাস্তা নির্মাণ ও তাদের দেশবিরোধী অপকর্ম শুরু করার পাঁয়তারা করছে।

জামাত-শিবিরের আবাসন প্রকল্প “জামায়াত পল্লী” ।


কিন্তু এতে এলাকার সচেতন নাগরিকরা বাঁধা দিলে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেন তারা। তাদের হুমকিধামকির ঘটনায় জামায়েত শিবিরের মাস্টার প্ল্যান থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে পুলিশ সুপার বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মোঃ হাফিজ মিয়া, জুনায়েদ মিয়া, আব্দুল হান্নান, মোঃ মুজিবুর রহমান, মোঃ সোহেল মিয়া, হারুনুর রশিদ ও মোহাম্মদ মোস্তফা স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ অভিযোগ দায়েরের দু’দিন পরেই চক্রটি গত ১২ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ রাতে তারাবীহ নামায চলাকালীন সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মোঃ হিরন মিয়ার ছেলে আইয়ুব মিয়া ও মরহুম ফজলুল করিম চৌধুরীর ছেলে জিয়াউল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অভিযোগকারীদের বাড়িঘরের সামনে ও দোকানে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে চেয়ার ভাংচুর ও প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এ ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে অভিযোগকারীরা নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং -১৬৬৬, তাং-১৪/০৪/২০২৩ ইং।
এদিকে, পুলিশ সুপারের নিকট দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সদর মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি সরজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ হুমায়ুন কবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

৩শত বছরের পুরনো কবরস্থানের জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা।


এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ হাফিজ মিয়া জানান, এলাকার কিছু ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবির এলাকায় আবাসন প্রকল্পের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার ষড়যন্ত্র করছে। পাশাপাশি তারা তাদের আবাসন প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য আমাদের ৩০০ বছরের পুরনো একটি কবরস্থানের জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণ করার পাঁয়তারা করছে। যা আমার মতো ধর্মপ্রাণ অসংখ্য মানুষ জীবনের বিনিময়ে হলেও প্রতিহত করবো। মুসলমানদের শেষ জায়গা হলো কবরস্থান। সেই কবরস্থানের জায়গা কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না।
দক্ষিণ পৈরতলা এলাকার জুনায়েদ মিয়া ও আব্দুল হান্নান এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের মহল্লার কিছু দুষ্কৃতকারী জামায়াত শিবিরের আস্তানা গড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আমাদের ৩০০ বছরের পারিবারিক কবরস্থানের জায়গা দখল করে জামায়াত পল্লীর জন্য রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু একজন মুসলমান হিসেবে আমরা কখনো এটি হতে দেবো না। তিনি বলেন, আমাদের এলাকার রেললাইনের পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছেন সেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবরের পাশে জামাতিদের আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলবে সেটা আমরা মেনে নিতে পারবো না।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ১ নং পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, আমি বর্তমানে ঢাকায় একটি ট্রেনিংয়ে আছি। বিষয়টি এ মূহুর্তে মনে পড়ছে না।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com