বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
বিচারধীন মামলা সম্পর্কে অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে তথ্য জানতে পারছেন বিচার প্রার্থীরা। অনলাইনের মাধ্যমে বিচার প্রার্থীরা আদালতের কার্যতালিকা থেকে মামলার পরবর্তী তারিখ, আদেশ, পূর্ববর্তী আদেশ এবং মামলার চলমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচার বিভাগের চালু হওয়া অনলাইন কজলিস্ট ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এসব সুফল পাচ্ছেন তারা৷
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অনলাইন কার্যক্রম জোরদার করেছে বিচার বিভাগ। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে স্মার্ট বিচার বিভাগ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ‘সকল মামলার তথ্য এক ঠিকানা’ স্লোগানে জেলা পর্যায়ে আদালতের বিচারাধীন মামলার তথ্য অনলাইনে প্রকাশের উদ্যোগ নেয় সরকার। অনলাইনে https://causelist.judiciary.gov.bd এই ঠিকানায় নিয়মিত আদালতে বিচারাধীন মামলার তথ্য পাচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। পাশাপাশি মোবাইলে গুগল প্লেস্টোরে ‘আমার আদালত’ নামে অ্যাপস ডাউনলোড করে একই সেবা মিলছে৷ বিচারপ্রার্থীরা অনলাইনে ঘরে বসেই বিনা খরচে তাদের মামলার পূর্ববর্তী আদেশ, বর্তমান অবস্থা, পরবর্তী তারিখ ও আদেশ সম্পর্কে জানতে পারছেন। এরজন্যে প্রথমে https://causelist.judiciary.gov.bd ঠিকানায় বা ‘আমার আদালত’ অ্যাপসে ডুকতে হয়। সেখানে ‘মামলার কার্যতালিকা’ অপশনে ক্লিক করতে হয়। এরপর বিভাগ, জেলা, আদালত ও তারিখ নির্বাচন করতে হবে। এছাড়াও শুধু নাম্বার ও তারিখ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত মামলা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানা যায়। দেশের অন্যান্য আদালতের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারাধীন মামলার তথ্য অনলাইনে জানতে পারছেন বিচার প্রার্থীরা। এর সম্পর্ক বিস্তারিত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নিচে তথ্য সেবা কেন্দ্রে জানা যাবে। এই তথ্য সেবা কেন্দ্রটি গত ২৮ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ বেগম শারমিন নিগার উদ্বোধন করেন।
এই বিষয়ে আদালতে আসা মোজাম্মেল হোসেন নামের এক যুবক বলেন, আমি প্রবাসে থাকি। আমার ভাইয়ের সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মামলা চলছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। আমি সম্প্রতি দেশে ফিরেছি। প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে আমার এক জানিয়েছিলেন, অনলাইনে মামলার তারিখ কবে তা দেখা যায়। দেশে ফেরার আগে অনলাইনে আমার মামলার শুনানির তারিখ জেনে এসেছি। এই বিষয়টি জানতে পারলে সবাই উপকৃত হবে।
মো. এমদাদ হোসেন রানা নামের আরেক বিচার প্রার্থী বলেন, আদালতে এসে জানতে পেরেছি ঘরে বসেই মামলার অবস্থা এবং আইনী সেবা পেতে পারি। পরবর্তী তারিখ আমার কবে তাও জানতে পারবো। অনেক সময় শুধু মামলার শুনানি কবে, এরজন্য আদালতে আসতে হতো। এই ধরনের সেবা চালু হওয়াতে সরকার ও জেলা জজকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই।
এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন বলেন, গত এপ্রিল মাসে ২৫ তারিখ আইনি মহোদয় আমাকে পিপি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর জানতে পেরেছি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ ও দায়রা জজ মহোদয় অনলাইনে তথ্য পদ্ধতি চালু করেছেন। অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় আইনী সেবা সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই পাবেন। বিষয়টি সম্পর্কে বেশি বেশি প্রচার করলে বিচার প্রার্থীরা আরও জেনে সুবিধা পাবেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির সানাউল্লাহ তালুকদার বলেন, অনলাইনে কজলিস্ট চালু হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচার প্রার্থী জনগন ঘরে বসেই তাদের মোকদ্দমার তথ্য, পরবর্তী ও পূর্ববর্তী তারিখ এবং অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারছেন। এতে তাদের সুবিধা হচ্ছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply