সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর রিপোর্ট
আড়ং-পারসোনাকে জরিমানা করা সেই শাহরিয়ারকে বদলি করায় সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই আদেশটি ওয়েব সাইটে আসার পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। মূহুর্তেই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল ও নিউজফিডে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রাত্য রাইসু ফেসবুকে লিখেছেন,
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক মনজুর মো. শাহরিয়ারকে আপনারা বদলি করছেন তো? খুব ভালো। আমরা তাকে এই সময়ের একজন নায়ক ঘোষণা করলাম। সরকারকে কে নিয়ন্ত্রণ করে? সরকার নাকি আড়ং?
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা উপ পরিচালককে বদলি করাইয়া আড়ং যদি পার পেয়ে যায় তাহলে দেশের লোকদের ভোক্তা অধিকার বলে আর কিছু থাকবে না। কেউ তখন সাহস পাবে না কিছু বলতে।
এই এনজিও কর্পোরেট সন্ত্রাসবাদ রুখতে হবে।
একজন প্রশ্ন রেখেছেন, প্রশাসনিক নিয়মে বদলী হতেই পারে, কোন কারণে বদলীকৃত কর্মকর্তা নতুন কর্মস্থলে যোগদানে গড়িমসি করলে Stand Released এর আদেশও হতে পারে। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে বদলীর আদেশের সাথে সাথেই Stand Released এর আদেশ কি স্বাভাবিক!?
আড়ংয়ের উত্তরা শাখাকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করা মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ভোক্তা অধিদফতর সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক পদ থেকে বদলি করে তাকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখার এক প্রজ্ঞাপনে সোমবার (৩ জুন) এ বদলির আদেশ দেয়া হয়।
উপসচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপসচিব পদমর্যাদায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয় ঢাকার উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা হিসেবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, খুলনা জোনে ন্যস্ত করা হলো। আগামী ১৩ জুন তাকে বদলি করা কর্মস্থলে যোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে। নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিলে ১৩ জুন বিকেলে তিনি বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন।
এর আগে সোমবার দুপুরে এক ক্রেতার অভিযোগের ভিত্তিতে আড়ংয়ের উত্তরা শাখায় অভিযানে নেতৃত্ব দেন মঞ্জুর শাহরিয়ার। মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামে ওই ক্রেতার অভিযোগ, গত ২৫ মে তিনি আড়ংয়ের উত্তরা শাখা থেকে ৭১৩ টাকায় একটি পাঞ্জাবি কিনেছিলেন। ছয় দিন পর ৩১ মে ওই একই পাঞ্জাবি কিনতে গিয়ে দেখেন, সেটির দাম ১৩০৫ টাকা। বেশি দামেই পাঞ্জাবিটি কিনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করেন তিনি। তার অভিযোগের ভিত্তিতে আড়ংয়ে অভিযান চালিয়ে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন।
অভিযান প্রসঙ্গে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘গত ২৫ মে এক ক্রেতা উত্তরা আড়ং থেকে একটি পাঞ্জাবি কেনেন ৭৩০ টাকায়। একই পাঞ্জাবি ৩১ মে কিনতে গেলে দাম রাখা হয় ১ হাজার ৩০৭ টাকা। অধিদফতরে এমন অভিযোগ করেন এক ভোক্তা। এ পরিপ্রেক্ষিতে আজ উত্তরা আড়ংয়ে অভিযান চালিয়ে এর সত্যতা পায় অধিদফতর। আড়ং অভিনব কায়দায় বেশি দাম লিখে ভোক্তাদের ঠকাচ্ছে। কী অবাক করা বিষয় ছয়দিনে একটি পাঞ্জাবির দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা। যার কোনো কারণ জানাতে পারেনি আড়ংয়ের শোরুমের কর্মকর্তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আড়ং একটি ব্র্যান্ড। দেশি ভালো পণ্য বিক্রি করে বলে তাদের প্রতি ক্রেতাদের রয়েছে আস্থা ও সরল বিশ্বাস। এটি পুঁজি করে কৌশলে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে, যা ভোক্তা আইনপরিপন্থী। এ অপরাধে তাদের সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দাম বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ ব্যাখ্যা করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অধিদফতরে ডাকা হয়েছে। তারা যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে না পারলে প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।’
অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘পাঞ্জাবির দাম বেশি নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করায় রাত পৌনে ৯টার দিকে উত্তরার আড়ং শোরুম খুলে দেয়া হয়েছে। আড়ং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ভোক্তা অধিকার ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ তারা আর করবে না।’
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply