সংবাদ শিরোনাম
উবার চালক গ্রেপ্তার হলেও ভ্যান চালক উধাও

উবার চালক গ্রেপ্তার হলেও ভ্যান চালক উধাও


সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর রিপোর্ট    

কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার নিহতের বাবা ইমদাদুল হক বাদী হয়ে শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন। পুলিশ ঘটনার পর থেকে ‘পলাতক’ উবার মোটরসাইকেল চালক সুমন হোসেনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করলেও কাভার্ড ভ্যানচালক নিরুদ্দেশ।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ঘাতক চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন লাবণ্যর সহপাঠী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের ২নং রোডের ২৫নং বাসার ৬ তলা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়েছে। লাবণ্য ক্যাম্পাসে যাচ্ছিল বলে পরিবার দাবি করলেও উবার চালক বলছেন তিনি খিলগাঁও যাওয়ার কথা বলেছিলেন।

ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, ‘উবার চালক সকালে কলেজ গেটে ছিলেন। লাবণ্যর কল পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে সুমন তাকে ফিরতি ফোন দেন। লাবণ্য খিলগাঁও ছায়াবীথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩নং সড়কের ৩১নং বাসার সামনে আসতে বলেন। পরে লাবণ্যকে নিয়ে সুমন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছামাত্র এক ব্যক্তিকে বাইকের সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হতে দেখে সুমন ব্রেক করেন। এ সময় একটি কাভার্ড ভ্যান লাবণ্যকে চাপা দেয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর লাবণ্যর মৃত্যু হয়। সুমন নিজেও আহত হন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নুরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুমন পালিয়ে যান। চিকিৎসা নেয়ার সময় সুমন ভুল ঠিকানা দেন। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেয়ার সময় দেয়া ঠিকানাও তার ভুল।

কাভার্ড ভ্যান চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। হাসপাতালে কথা হয় উবার চালক সুমনের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ঘণ্টায় ৪০ কিমি. বেগে শ্যামলী থেকে খিলগাঁও যাচ্ছিলাম। হঠাৎ রাস্তায় চলে আসা পথচারীকে বাঁচাতে ব্রেক করলে আমরা দু’জনই পড়ে যাই। দু’জনেরই মাথার হেলমেট ভেঙে যায়। পেছন দিক থেকে বেপরোয়া কাভার্ড ভ্যান ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন লাবণ্য। পরে তিনি মারা যান। সুমন বলেন, আমি ভয় পেয়ে পালিয়ে যাই। ছয় মাস ধরে ঢাকায় উবারে বাইক চালাচ্ছি।

এদিকে শুক্রবার দুপুর ১২টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী, লাবণ্যর সহপাঠীরাসহ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উবার চালক সুমন ও ঘাতক কাভার্ড ভ্যান চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবি তোলেন। এ সময় অনেকের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দাবি মোদের একটাই, ঘাতক চালকের বিচার চাই, আর কত লাবণ্যর প্রাণ এভাবে সড়কে বিলিয়ে দিতে হবে’।

লাবণ্যর সহপাঠী শাহতাজ ইসলাম শোভন বলেন, আমার মা কেন উদ্বিগ্ন থাকেন যে আমার সন্তান নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারবে কি না? কেন এত দুর্ঘটনার শিকার আমরা। নিরাপদ সড়ক এখন দেশবাসীর দাবি। লাবিব নামের আরেক সহপাঠী বলেন, ঘাতক চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ওর আত্মা শান্তি পায়। শুক্রবার শ্যামলীর বাসায় গিয়ে জানা গেছে, জানাজা শেষে লাবণ্যর মরদেহ সাভারের তেঁতুলঝড়ায় নানার বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) প্রাণ হারান।

ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।   

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com