এক দেশে ছিল এক রাজা। তার বংশের কোন প্রদীপ ছিল না। এমন কেউ ছিল না যে তার মৃত্যুর পরে রাজ্যটা দেখবে। তাই সে খুব চিন্তিত হয়ে গেল।
হঠাৎ করে তার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সে তার রাজ্যের সমস্ত বাচ্চাদেরকে ডাকলেন এবং বললেন যে, তোমাদের মধ্যে একজন হবে এই রাজ্যের রাজা। তখন সবাই খুশিতে আত্নহারা। পাশাপাশি রাজামহাশয় আরো বললেন যে, তোমাদের সবাইকে একটি করে বীজ দেওয়া হবে এবং তোমাদের মধ্যে ১ বছরে যে সবচেয়ে ভাল গাছ ফলন পাবে সে হবে এই রাজ্যের রাজা। তখন সবাই তাদের বাড়ি গিয়ে ওই রাজার দেওয়া বীজটি মাটিতে পুতে ফেললো।তারা সকলেই বীজটির যত্ন করতে লাগলো।অনেকেরই বীজ থেকে চারা বড় হতে লাগলো।কিন্তু তাদের মধ্যে সাগর নামের এক ছেলে ছিল (এখানে সাগর একটি ছদ্ম নাম) সেও রাজার দেওয়া বীজটি খুব যত্ন করতে লাগলো ।১ মাস পর সবার চারাই বড় হতে লাগলো। কিন্তু একমাত্র সাগরের চারাই বড় হচ্ছিল না।
২ মাস পর সবার চারাই আরেকটু বড় হল কিন্তু সাগরের বীজ থেকে চারা উঠলোই না।তখন সাগর একটু চিন্তিত হয়েছিল।এইভাবে মাসের পর মাস যেতে যেতে এক বছরে চারা বড় হতে থাকে। ১২ মাস এর মাথায় সবাই একত্রিত হল রাজাকে তাদের চারা দেখাবে বলে। সবার চারা গুলোই খুব সুন্দর ছিল। কিন্তু সাগরের জায়গাতে ছিল শুধু একটু মাটি এবং পানি কারন তার বীজ থেকে চারা হয়নি।
সাগর বেশ ভয় পেল এইটা ভেবে যে রাজা মনে হয় তাকে শাস্তি দিবে। তবুও সে গেল রাজ দরবারে। তখন সবার চারাই রাজা দেখেছে। ঠিক তখনি সাগরের চারা টি রাজা দেখে অবাক। তখন কিছুই বলেননি রাজামশায়!
একটু পরে যখন রায় দেবার পালা তখন রাজা মহাশয় বলেন সাগরই হবে রাজা! সবাই তো অবাক! তখন রাজা অট্রহাসি দিয়ে জানালো আমি তোমাদের সবাইকে নষ্ট বীজ দিয়ে ছিলাম আর তোমরা তা টের পেয়ে হাট থেকে ভাল বীজ কিনে সেগুলো পরিচর্চা করে বড় করেছো। কিন্তু সাগর আমার প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে নষ্ট বীজগুলোই লাগিয়েছে।
সাগর তোমাদের মত অসৎ পথ বেছে নেয়নি। তাই আমি তাকে রাজা হিসেবেই ঘোষনা করলাম।তিনি আরো বলেন, একজন রাজার সবচেয়ে বেশি গুন থাকতে হয় সততা এবং পিছপা না হওয়ার মন-মানসিকতা।
লেখাটা হইতবা রুপকথার গল্প তবে আমাদের বর্তমান সমাজে এ জাতীয় কর্মকান্ড বেরেই চলছে! সততার থেকে আমি বা আমরা ঠিক ১শত মাইল দূরে অবস্তান করছি! কেন জানি আমাদের ধৈর্য্য শক্তি কমে গিয়ে হিংসুটে জীবন যাপন করছি! ভাইয়ের ক্ষতি কামনায় আরেক ভাই জিলাপী বিতরন করছি ! দিনরাত নিজ ভাইকে গর্তে ডুকানোর চেষ্টায় মগ্ন! তবে এ হিংসুটে কর্মকান্ড কতটুকু যুক্তিযুক্ত বলে আপনারা মনে করছেন?
লেখকঃ ইফতেহার রিফাত জেলা প্রতিনিধি- বাংলারচোখ ডটকম।
Leave a Reply